বিশ্বজিৎ দত্ত: [৩] শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান মঙ্গলবার গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বিষয়ক মালিকদের প্রস্তাবটি অনুমোদন করেন। তিনি বলেন, ১ ডিসেম্বর থেকে এই মজুরি গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য প্রযোজ্য হবে। এরসঙ্গে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট যুক্ত হবে।  

[৪] ২০১৮ সালে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮ হাজার টাকা। এবারে তা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ হাজার ৫০০ টাকা। এই হিসাবে মজুরি বৃদ্ধির হার ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। 

[৫] এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক, ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, মালিকদের দেয়া মজুরি প্রস্তাবটি শ্রম মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু এখনো এটি পাশ হয়নি।  প্রস্তাবটি আইনমন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর আরো কয়েকটি ধাপে পাশ হবে। এটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহীর কাছেও যাবে। প্রধানমন্ত্রী এখন বিদেশে আছেন। তিনি দেশে আসলে নিশ্চই এই মজুরির কিছু পরিবর্তন হবে। এর আগের বারও তিনি এটি করেছিলেন। 

[৬] তিনি এই মজুরি সম্পর্কে বলেন, মালিকরা যে প্রস্তাব শ্রম মন্ত্রণালয়ে দিয়েছে, তাতে শ্রমিকদের দাবি দাওয়ার  বিষয় নেই। তাদের পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, রেশন এসব  নাই। তা ছাড়া যেভাবে মূল্যস্ফীতি হয়েছে তাও এখানে এডজাস্ট করা হয়নি। এই মজুরি দিয়ে আসলে শ্রমিকরা চলতে পারবেনা। তাদের জীবন নির্বাহ করা কষ্টকর হয়ে যাবে।  আমরা যে ১৭ হাজার ৫৬৮ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব করেছিলাম তা বাস্তবায়ণ হলেও শ্রমিকরা এই সময়ে টিকে থাকতে পারতো। 

[৭] বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুর রহমান বলেন, আমাদের দাবি ছিল ন্যূনতম মজুরি হবে ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু সরকার মালিকদের দাবি অনুযায়ি করেছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। এটি পুনর্বিবেচনার দাবি করছি। আমরা বিশেষ করে আশা করে আছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আসলে তিনি তা পুণর্বিবেচনা করবেন।  তিনি বলেন, আমাদের রেশন দেওয়ার একটি বিষয় ছিল। সেটিও এখন দাবি করছি। 

[৮] উল্লেখ্য, প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা হিসেবে ১২ হাজার ৫০০ টাকা সমান হয় ১১৩ ডলার। যা যেকোন পোশাক উৎপাদনকারী দেশের মজুরির চেয়ে কম। কম্বোডিয়াতেও ন্যূনতম মজুরি ১৭০ ডলার। কম্বোডিয়ান মূদ্রার নাম রিয়েল।  কম্বোডিয়ান রিয়েলের হিসাবে সেখানকার শ্রমিকদের মজুরি ৬ লাখ ৯২ হাজার রিয়েল।  বিশ্বব্যাংকের হিসাবে কম্বোডিয়ায় মূল্যস্ফীতি ৩.৫ শতাংশ। 

[৯] ২০১৮ সালে যখন  পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারিত হয়, তখন গড়ে ডলারের দাম ছিল ৮৩ টাকা ৮৭ পয়সা।  এই হিসাবে ২০১৮ সালে ডলারে  শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ছিল ৯৫ ডলার।

[১০] মালিক পক্ষের প্রস্তাব অনুযায়ি ডলারের হিসাবে শ্রমিকদের ন্যুতম মজুরি  ৫ বছর পরে  বাড়বে মাত্র ১৮ ডলার। টাকায় যা ১ হাজার ৯৯২ টাকা ২০ পয়সা। সম্পাদনা: ইকবাল খান